Rose Good Luck দু'জন বাবা Rose Good Luck

লিখেছেন লিখেছেন মামুন ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫, ১২:৫৪:০৭ দুপুর



[আমি এই শিরোনামে একটি লেখা লিখেছিলাম। কিন্তু সেটাতে কেন জানি সন্তুষ্ট হতে পারছিলাম না। তাই আবারো লেখাটিকে নতুনভাবে লেখবার চেষ্টা করলাম। আমার কাছে ভালো লেগেছে, আশাকরি পাঠকের কাছেও খারাপ লাগবে না। ]

এক.

১৪ ই ফেব্রুয়ারী।

যশোহর এয়ারপোর্ট থেকে বিমানের বাসে চড়েছে আনাম। আজ প্রায় চৌদ্দ বছর পরে খুলনায় নিজের বাড়িতে যাচ্ছে। দেশেই এসেছে গতরাতে। পুরা পরিবার ওর সাথে। দুই মেয়ে আর রুমু। এই পনেরটি বছর ওর সাথে সুখ-দুঃখে সাথে থাকার একমাত্র সঙ্গিনী। আনামের জীবনসঙ্গিনী।

বাসের জানালা দিয়ে পিচঢালা পথের দু’পাশের বিস্তীর্ণ ধানি জমির দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে বেশ আগে ফিরে গেল আনাম। সেই ছেলেবেলায় বাবার পাশে বসে এরকমই দু’পাশে ধানের ক্ষেত দেখে দেখে দাদাবাড়ি যেতো। মুড়ির টিনের মত সেই বাসগুলোর সামনের দিকে একটা লম্বা রডের মাথা বাঁকানো অংশওয়ালা হ্যান্ডেল ঘুরিয়ে স্টার্ট নিতে হতো। আর এরকম পিচের মসৃণ রাস্তা ছিল না। এবড়ো থেবড়ো ইটের সলিং বিছানো পথ। কিন্তু তবুও কত আনন্দ ছিল সেই সময়ের বুকে। আজ এই মসৃণ পথে চলতে গিয়েও সেই আনন্দের ছিটেফোটাও কি অনুভব করছে?

জীবনের চলার পথটি যেভাবে বন্ধুর হয়েছে, কাছের সম্পর্কগুলোও ততোটা দূরে সরে গেছে। বাবা! যাকে আনাম আব্বা ডাকে। তিনি কিভাবে যেন দূরে সরে গেলেন। এখন এই যে ওর পাশে রুমু রয়েছে... ওর জীবনসঙ্গিনী। ওকে কেন্দ্র করেই আনামের জন্য তিনি দূরে সরে গেছেন।

চকিতে নিজের সীটে সোজা হয়ে বসে আনাম।

বাবা দূরে সরে গেছেন? না সে নিজে অভিমান করে বাবার থেকে দূরে চলে গিয়েছিল? নিজের সচ্ছল এক জীবনের প্রত্যাশায় দেশ থেকে অনেক দূরে নিজেকে সরিয়ে রেখেছিল।

বাবারা কখনোই দূরে সরে যান না। যেতে পারেন না।

আজ বাবার প্রচণ্ড অসুস্থতার জন্যই আনাম দেশে এসেছে। তবে একেবারে স্বল্প সময়ের জন্য। ইচ্ছে রয়েছে, বাবাকে সাথে করেই সে ফিরে যাবে। ওর নিজের ভূবনে। যেখানে এই একটি মানুষের জন্য হৃদয়াভ্যন্তরে তিল তিল করে ভালোবাসা জমিয়ে এক আলাদা জগত তৈরী করে রেখেছে সে। যার খবর আনামের দুই মেয়ে এবং খোদ রুমুও জানে না। সেই বাবা আজ অসুস্থ। খুলনা শহরের এক মাঝারি মানের ‘বিশেষায়িত হাসপাতালে’ চিকিৎসাধীন। সেখানে আরো ছোট দুই ভাই বাবার সার্বক্ষণিক দেখাশুনা করছে।

ঘন্টাখানেক পর বাস থেকে নেমে একটা ব্যাটারি চালিত অটোরিক্সা নিল আনাম। অনেক বছর পরে নিজের শহরে ফিরেছে সে! কত পরিবর্তন হয়েছে এই অবহেলিত নগরীটির।

দূর থেকে হাসপাতালটি দেখে একেবারে ছেলেবেলায় ফিরে যায় আনাম। সেই ক্যাডেট কলেজ জীবনের সময়ে। তখন ক্লাশ সেভেনে পড়ে। ১৯৮৪ ইং সালে আনাম ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজে সুযোগ পেয়ে ভর্তি হয়। আনামের জীবনকে সম্পুর্ণ ওলট-পালট করে দিয়ে চিন্তা-ভাবনার জগৎটাকে সহ সে এক ভিন্ন যায়গায় এসে পড়ল যেন। সবে ছয়টি ক্লাস পার করা বলতে গেলে এক শিশুই তো ছিল তখনো। সারাদিন ইচ্ছেমত ঘুরে বেড়ানো খুলনার চিরপরিচিত সেই মুক্ত পরিবেশ থেকে ওকে নিয়ম-শৃংখলার এক আবদ্ধ ভূবনে পাঠানো হল। যেখানে স্বাধীনভাবে শ্বাস নেবার মতোও অবকাশ ছিল না। আর 'সিনিয়র' নামের কিছু দানব সদৃশ দু'পেয়েদের নিষ্ঠুরতায় সেই পরাধীন জগতটি আরো ভয়ংকর হয়ে উঠল আনামের কাছে।

শারীরিক এবং মানসিক টর্চারে আনামের ঠাই হয়েছিল যশোহর সিএমএইচ (সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল) এর কমিশন্ড ব্লকে। ওর 'প্লুরাল ইফিউসন' হয়েছিল। অবস্থা খুবই সিরিয়াস আঁকার ধারণ করে। সে কেমন একটা ঘোরের ভিতর থাকত। আজ অনেক বছর হয়ে গেলেও আবছা আবছা সে সময়গুলোকে এখনো মনে করতে পারে।

আনামের আব্বা তখন খুলনায় কর্মরত। প্রতিদিন খুলনা থেকে অফিস করে তিনি আমানকে দেখতে আসতেন। ওর সাথে কিছু সময় কাটিয়ে আবার বাসায় চলে যেতেন পরবর্তী দিনে অফিস করার জন্য। আনামের জ্ঞান ফিরলে সে ওর আব্বাকে তার পাশে বসা দেখতে পেত। তখন খুলনা থেকে যশোর এর রাস্তা ছিল খুবই খারাপ। আর ওর আব্বা একটি মটর বাইক চালাতেন। সারাদিনের ক্লান্তিকে ঝেড়ে ফেলে বিকেল ৫টার পরে সেই বাইকটি নিয়ে প্রতিদিন ওকে দেখতে চলে আসতেন সিএমএইচে!! এভাবে প্রায় ৪ মাস ওনাকে আসতে হয়েছিল।

দুই.

একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে হাসপাতালের লিফটের সামনে এসে দাঁড়ায় আনাম। আজ সে নিজেই দুই মেয়ের বাবা। আর ওর আব্বা থেকে অনেক দূরে রয়েছে... প্রায় ১৪ বছর ধরে। এতগুলো বছরে একবার তাঁর সাথে দেখা হয় নাই। মোবাইলে কথা হয় নাই। আসলে আব্বা আব্বার মতই রয়ে গেছেন। আনামই পালটে গেছে। না হলে সে কেন বিগত বছরগুলোতে তাকে দেখতে দেশে এলো না?

হাসপাতালের দরজা পার হয়ে ভিতরে ঢোকার পর থেকে আনাম নিজের হার্টবীট অনেক জোরে শুনতে পাচ্ছিলো। দেখলো বাবা শুয়ে আছেন শান্তভাবে। আনামের মনে হল, শব্দে ভরা পৃথিবীটা হঠাৎ নিরব হয়ে গেছে। শব্দটা আচমকা থেমে গিয়ে অদ্ভুত অনুভুতি সৃষ্টি করল আনামের সারা শরীর মনে। মনের ভিতর নি:শব্দ আবেগ সাড়া দিল, ' আব্বা! '

বাবা কি সেই কথা শুনলেন! চোখ খুললেন। বাচ্চাদেরকে নিয়ে রুমু আনামের আগেই কেবিনে ঢুকেছিল। বাবার পায়ের কাছে বসে ছিল রুমু। সে বাবার মুখের দিকে তাকিয়ে। তার ঠিক পাশে বাচ্চারা কেবিনের দেয়াল ঘেঁষে দাঁড়িয়ে। আনাম এক পলক স্ত্রী সন্তানের মুখে চোখ বুলিয়ে বাবার দিকে ফিরল। বাবা চোখ খুলে নাতনীদের দিকে তাকিয়ে দেখলেন। আনামের মনে হল বাবা তার অনুভুতি প্রকাশের শক্তি পাচ্ছেন না। শুয়ে থাকা বাবার দুই পাশে পড়ে থাকা হাতগুলি দেখে আনামের পা গুলি ভারী হয়ে গেল। ওই হাতদুটো ধরার জন্য সে এতটা পথ এসেছে! কেবিনের দরজা থেকে বেড পর্যন্ত জায়গাটা কি তার চেয়ে দূর! এতদূর! অসহায় লাগল আনামের। মনে মনে স্রষ্টাকে ডাকল,' আল্লাহ!! ' একটা কিছু প্রচন্ড শক্তি তাকে যেন ঠেলে রুম থেকে বের করে দিতে চাইল! সেই শক্তিটাকে অনেকটা জোর করে দরজা থেকে সরিয়ে আনাম ভিতরে ঢুকল।

এখানে শূন্যতা। নি:সীম। আনাম ওই বুক খালি অনুভুতি নিয়েই খানিকটা যন্ত্রের মতো বাবার কাছে এগিয়ে গেল। বাবার একটা হাত ধরল। বাবা জেদী বাচ্চার মত স্বরে বললেন, ' আনাম, আমার জুতাগুলি দে '।

আনাম হঠাৎ স্বাভাবিক হয়ে গেল। বাবার শব্দে কিছু অচেনা থাকলেও তার ভালো লাগল। সে একটু হেসে জিজ্ঞেস করল, 'কি করবেন!'

বাবা বললেন, 'বাসায় যাব!'

আনামের কষ্ট হল। সে তার বোধ দিয়ে বাবার অনুভুতিকে অনুসরণ করার চেষ্টা করল।

কি দুর্দান্ত মানুষটি আজ কেমন নিস্তেজ হয়ে বিছানায় পড়ে আছেন! তাঁকে খাইয়ে দিতে হচ্ছে, টয়লেট করিয়ে দিতে হচ্ছে । তিনি এই বদ্ধ কেবিনে একদন্ডও থাকতে চান না। কিন্তু নিরূপায়। কারো কিছু করার নেই! নির্দয় সময়! শুধু এই বেডটা থেকে নেমে জুতোজোড়া পায়ে দিয়ে কেবিনের দরজার বাইরের ওই বারান্দাটাতে বাবা হেটে যেতে পারছে না! আনাম যদি হাউমাউ করে কাঁদতে পারত!

তার মুখে হাসির মত এক রকম ভংগি হল। বাবার হাতটার ওপর অন্য হাতটাও রেখে দুই হাতে হাতটা আঁকড়ে ধরল। বাবা লক্ষী ছেলের মত ওভাবেই চুপচাপ শুয়ে রইলেন। এক পলক আনামের মনে হল সে বুঝি বাবা! বাবা বুঝি সে নিজে!

সময়টা উড়ে চলে গেল!

বিদায়ের সময় উপস্থিত!!

জীবন কতটুকু সময়!!!

বাচ্চারা দাদার বেডের পাশে অনেকক্ষণ কথাবার্তা বলল। রুমু মাঝে মাঝে যোগ দিচ্ছিল। ওর হাসিতে বিষাদ। বাবা নিস্পৃহ। আনামকে ফিরতে হবে। সে বাবার কাছ থেকে বিদায় নিলো। রাজধানীর জীবন বিশাল অজগরের মত হা করে আছে। তার ভারী শ্বাসে তীব্র টান! আনামের ছুটি শেষ। সে মাথা নিচু করে বাবার পায়ের কাছে বসে ছিল। বাবা কি রাগ করেছে? আনাম চোখ তুলে বাবার দিকে তাকাল। বাবার মুখের ওপর থেকে হালকা আনন্দের আলোটা মুছে গেছে। অন্ধকার। বাবার মুখের সেই অন্ধকার তীরের মত তীব্র গতিতে বিঁধল ছেলের মনে।

ঐ মুহুর্তটাতে সময় যেন ছেলের চোখে থমকে গেল... সময়? কোন সময়? সেই বাবার হাত ধরে হাঁটি হাঁটি পা পা করে হাঁটতে শিখার সময়? কাঁধে চড়ে বিশ্বভ্রমনে বের হবার সময়? সকল আনন্দঘন সময়ে এই দৃঢ় হাতটি কত নিশ্চয়তা দিয়েছে, সেই সময়? সকল বাধা-বিঘ্নকে অতিক্রম করার সময়ে মানসপটে যে মানুষটির 'থাকাটা' ভেসে উঠেছে, মনোবল অক্ষুন্ন রেখেছে- সেই সময়?

অথচ আজ আরো একটু থাকতে চেয়েও কেন থাকতে পারলো না? পারছে না? বাসের টিকেট চারটা পনেরোতে... চাইলেও কেন কিছু করা যায় না? কেন বাবার কাছে আরো একটু বেশী সময় থাকা যায় না?

তিন.

বিদায় নিতে গিয়ে রুমুর মুখে দুশ্চিন্তার ছাপ পড়ল। চোখে জল বের হবে হবে এই অবস্থায় শ্বশুরকে বিদায় জানিয়ে সে কেবিন থেকে বের হয়ে যায়। বাচ্চারা মাকে অনুসরণ করে। ছোট ভাইয়ের পাশে শুয়ে থাকা বাবা... বাবার হাতটা ধরে আনামের মনে হয় বাবা যেন একটু নিশ্চয়তা পেতে চায় ছেলের কাছে! সে মনে মনে বলে,' বাবা! তোমার কিছু হবেনা, সব ঠিক হয়ে যাবে'... ঠিক যেভাবে বাবা জীবনের প্রতিটি পরাজিত সময়ে ছেলেকে বলতেন...বাবার সেই আত্মবিশ্বাসী ভরসা, আশ্বাস সবই আনামের মনে প্রতিধ্বনি তুলল, নিরবে। সেই স্বর, সেই আশ্বাস বাবাকে দেবে বলেই কি সে এতটা পথ ভেংগে আসেনি? আনাম অনুভব করল, বাবার ব্যক্তিত্বের শক্তিটা সে এখনো অর্জন করতে পারেনি! কেন মুখে কথা ফুটছে না!

মাথা নিচু করেই অস্ফুট উচ্চারণে আনাম বাবাকে কী যে বলল- সে নিজেই ভালো করে শুনতে পেল না। তার সমস্ত মন আক্ষেপে ভরে গেল, আজ কেন বাবাকে বাবার মত সে 'সব ঠিক হয়ে যাবে' বলতে পারলো না?

বিমানের বাসে উঠে আনাম তার পাশের বউ বাচ্চা সব বেমালুম ভুলে নিজের মনের ভিতর ডুব দিয়ে রইল।... বাবার চোখে কি জল ছিল বের হয়ে আসার সময়ে? না হলে কেন চোখে চোখ রাখতে পারলেন না? নিজেকে সে স্পষ্ট দেখছিল। বাবার দিকে পিছন না ফিরে কেবিন থেকে বের হয়ে যাচ্ছে একজন অক্ষম সন্তান, যে তার বাবার কাছে আরো কিছুক্ষণ থাকতে চেয়েছিল!

বাবা! যার অনেক চাওয়া-পাওয়া এই ছেলে পূরণ করতে পারেনি। হয়তো পেরেছে। কিন্তু শেষবার চোখে চোখ কেন রাখলেন না বাবা?? আমার কষ্টগুলি বাবাকে কে বলবে? একজন সন্তানের অক্ষমতা, বৃত্তাবদ্ধ কর্পোরেট জীবন, অভাব, পারিবারিক সম্পর্কগুলোর টানাপোড়েন, অসুস্থ প্রতিযোগিতা এসব কিছু- বাস্তবে সবটুকু কি গুছিয়ে বোঝানো যায়? স্মৃতিগুলি স্পষ্ট। ঘুরেফিরে মূহুর্ত গুলি কখনো শব্দ, কখনো ছবি হয়ে সামনে এসে চলে যাচ্ছিল। আনাম ঠিকভাবে চোখ খুলে রাখতে পারছিল না। তার চোখ দিয়ে পানি বের হয়ে সব ঝাপসা করে দিয়েছে! তার মন শ্রবণাতীত চিৎকারে জগৎ সংসার শতচ্ছিন্ন করল-

'পৃথিবী!

কেন তুমি সন্তানদের বাসযোগ্য হচ্ছো না!!!'

রুমু স্বামীর মুখের দিকে বিষন্ন মমতা নিয়ে তাকিয়ে ছিল। আনামের চোখে তা ধরা পড়ল না। তার স্মৃতির সমান্তরালে সমান গতিতে বাস ছুটছিল। বাসের গতি সামনে, আনামের মন ছুটছিল কখনো শৈশবে, কখনো বর্তমানে , কখনো নিজের অনাগত বার্ধক্যে! যেখানে এখন বাবা শুয়ে আছে! কেবিন নাম্বার ৩১৮ তে..

৩১৮ নাম্বার একটা নাম্বার হতে পারে... একটা নিছকই নাম্বার। কিন্তু সেখানে একজন বাবা শুয়ে আছেন...

আনামের দুই মেয়েকে ছেড়ে দেশের বাইরে নিজের জগতে ঘন্টাখানেক দূরত্তের পথ থাকতে তার কেমন কষ্ট হয় সেটা এখন আবার অনুভব করল। আর ওর আব্বা ওকে ছেড়ে এতোগুলো বছর হৃদয়ে কি যাতনা ই না অনুভব করছেন!

আজ এই ভালবাসার দিনে সে তার বাবার কাছে এসেছে কি ভালবাসার টানে?

নাকি নিছক লোক দেখানো লৌকিকতার কিছু সিস্টেমেটিক ধাপের অনুবর্তী হতে?

যে ভালোবাসা এতোদিন জমাট বরফের মত হৃদয়ে জমিয়ে রেখেছে, তার একটুও কি বাবাকে জানাতে পারল?

১৯৮৪ ইং সালে একজন বাবা তাঁর শত ব্যস্ততার মাঝেও তাঁর সন্তানকে প্রতিদিন সময় দিয়েছিলেন। এরপর আরো অনেকগুলো বছর ও দিয়েছেন... যতদিন জীবিত থাকবেন দিয়ে যাবেন। কিন্তু সেই সন্তান আজ বাবা হয়ে তাঁর জনকের জন্য কিছুই করছে না। এতটাই যান্ত্রিক জীবনে সে অভ্যস্ত যে হৃদয়টাও তাঁর যন্ত্রে পরিণত হয়েছে।

আসলে দুইজন বাবা লেখাটাই ভুল হয়েছে। এখানে একজন ই বাবা! তিনি আনামের ‘আব্বা’। আনাম তো একজন ‘সন্তানই’ হয়ে উঠতে পারল না আজো। বাবা তো বহু দূরের কথা।

দুই সন্তান এর জন্মনিবন্ধন কার্ডে আনামের নাম লেখা থাকলেও আজো সে বাবা হতে পারল না!!

(শেষ)

বিষয়: সাহিত্য

৯২৩ বার পঠিত, ১১ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

305749
২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ দুপুর ০৩:২৮
পুস্পগন্ধা লিখেছেন :
হুমম, আগের লেখাটাও পড়েছিলাম আর আজ এটাও পড়লাম, দুইটা লিখাই মনের ভিতর অদ্ভুত এক কস্টের, কান্নার জন্ম দিল। হৃদয় ছোয়া লিখাটির জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ......... Good Luck
২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ বিকাল ০৫:৪৩
247388
মামুন লিখেছেন : দুটো লেখার সাথেই ছিলেন এবং সুন্দর অনুভূতি রেখে গেলেন, অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনাকে স্বাগতম! ভালো থাকুন সব সময়।
Good Luck Good Luck
305767
২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ বিকাল ০৫:২২
মাহবুবা সুলতানা লায়লা লিখেছেন : পুস্পগন্ধা লিখেছেন :
হুমম, আগের লেখাটাও পড়েছিলাম আর আজ এটাও পড়লাম, দুইটা লিখাই মনের ভিতর অদ্ভুত এক কস্টের, কান্নার জন্ম দিল। হৃদয় ছোয়া লিখাটির জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ......... Good Luck সহমত
২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ বিকাল ০৫:৪৪
247389
মামুন লিখেছেন : সাথে থাকার জন্য আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ। ভালো থাকুন আপনিও।
জাজাকাল্লাহু খাইর।Good Luck Good Luck
305856
২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ সকাল ০৫:৩৪
কাহাফ লিখেছেন :
ক্রম বর্ধমান প্রযুক্তির উপর ভর করে এগিয়ে আজকের উপস্হাপনা! জমিন থেকে আকাশ পথ!
সেই ভাল লাগা ও মুগ্ধতাও বেড়েই চলল কষ্টময় অনুভূতির সাথে পাল্লা দিয়ে!
'বাবা'দের জন্য অনেক অনেক শ্রদ্ধা ও ভালবাসা!!
২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ সকাল ০৮:২২
247467
মামুন লিখেছেন : সুন্দর মন্তব্যটির জন্য অনেক ধন্যবাদ এবং ভালো লাগা প্রিয় কাহাফ ভাই।
শুভ সকাল।Good Luck Good Luck
305868
২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ সকাল ০৯:৪২
অষ্টপ্রহর লিখেছেন : অনুভূতিকে নাড়া দেওয়ার মত লেখা! অনেক ভাল লাগলো।
২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ দুপুর ১২:৫৮
247489
মামুন লিখেছেন : আামার ব্লগে স্বাগতম!
সুন্দর অনুভূতি রেখে গেলেন, অনেক ধন্যবাদ।
ভালো থাকুন প্রিয়!Good Luck Good Luck
305896
২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ দুপুর ০১:১৫
অষ্টপ্রহর লিখেছেন : ধন্যবাদ ভাইয়া।
আপনার সুস্বাস্থ্য কামনা করছি।
305934
২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ বিকাল ০৪:৩১
সন্ধাতারা লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু শ্রদ্ধেয় সুহৃদ মামুন ভাইয়া।

১৯৮৪ ইং সালে একজন বাবা তাঁর শত ব্যস্ততার মাঝেও তাঁর সন্তানকে প্রতিদিন সময় দিয়েছিলেন। এরপর আরো অনেকগুলো বছর ও দিয়েছেন... যতদিন জীবিত থাকবেন দিয়ে যাবেন। কিন্তু সেই সন্তান আজ বাবা হয়ে তাঁর জনকের জন্য কিছুই করছে না। এতটাই যান্ত্রিক জীবনে সে অভ্যস্ত যে হৃদয়টাও তাঁর যন্ত্রে পরিণত হয়েছে।

আসলে দুইজন বাবা লেখাটাই ভুল হয়েছে। এখানে একজন ই বাবা! তিনি আনামের ‘আব্বা’। আনাম তো একজন ‘সন্তানই’ হয়ে উঠতে পারল না আজো। বাবা তো বহু দূরের কথা।

হৃদয়স্পর্শী। জাজাকাল্লাহু খাইর।
২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ রাত ০৯:৪৩
247580
মামুন লিখেছেন : ওয়ালাইকুম আসসালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহে ওয়া বারাকাতুহু শ্রদ্ধেয়া আপুজি!
আপনার সুন্দর অনুভূতি জেনে অনেক ভালো লাগছে।
ভালো থাকুন।
বারাকাল্লাহু ফীহ।Good Luck Good Luck

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File